ঈসা উদ্ধৃতিতে যোগ ও বাদ দিতেন

বাইবেলের Satanic Verse এবং ভণ্ড মাসিহ =================================. আল কুরআন থেকে Satanic Verse বের করতে আর মুসলিমদের ঈমান নষ্ট করার জন্য খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচারকরা কী প্রাণান্তকর প্রচেষ্টাটাই না চালায়।

তাই? সেটা আসলে বেশি প্রচলিত পেয়েছে মুসলমান সম্প্রদায়ের একজনের প্রচেষ্টার মাধ্যমে – সালমান রুশদি। সেট্যানিক ভার্স নিয়ে আমার বেশি ইন্টারেস্ট নেই।

কিন্তু তাদের ধর্মগ্রন্থ বাইবেল ভালোমত পর্যবেক্ষণ করলে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য বেরিয়ে আসে!

বা, আরেকটি হিংসাত্মক আক্রমন, কত মজা…

বাইবেলের পুরাতন নিয়ম (Old Testament) এর তাওরাত [১] অংশে কঠোরভাবে নির্দেশ দেয়া আছে যে, ঈশ্বর যে বাণী প্রদান করেছেন তার সাথে কোনো কিছু যোগ করা যাবে না। আবার বাদও দেয়া যাবে না।

“আমি তোমাদের যে আদেশ দিয়েছি তার সঙ্গে তোমরা কোন কিছু যোগ কোর না এবং তার থেকে কোনো কিছু বাদ দিও না। তোমরা অবশ্যই তোমাদের প্রভু, ঈশ্বরের আদেশ মান্য করবে, যা আমি তোমাদের দিয়েছি।“ [বাইবেল, দ্বিতীয় বিবরণ ৪:২]

কাজেই কোন সত্য নবী কখনো ঈশ্বরের বাণী থেকে একটা শব্দও যোগ-বিয়োগ করতে পারে না। ঈশ্বরের বাণী হুবহু তুলে ধরাই একজন সত্য নবীর বৈশিষ্ট্য হবে।

যদিও আমি একমত যে আল্লাহর কালাম পরিবর্তন করার বিরুদ্ধে সতর্কবাণী আছে কিতাবে, এই আয়াতে (দ্বিতীয় বিবরণ ৪:২) সেই প্রসঙ্গে বলা হচ্ছে না। এখানে বলা হচ্ছে যেন কেউ তৌরাত শরিফের হুকুম/আদেশগুলোর সঙ্গে অন্য কোন হুকুম যোগ না করে বা কোন হুকুম বাদ না দেয়। ঈসা মসীহও প্রতিজ্ঞা করেছে যে তাওয়াতের পরিবর্তন হবে না (মথি ৫:১৮)। বাইবেলে বিভিন্ন জায়গায় সতর্কবাণী আছে যেন কেউ কিতাবের কথা পরিবর্তন না করে (যেমন প্রকাশিত কালাম ২২:১৮)

বাইবেলে লুক লিখিত সুসমাচারে উল্লেখ আছে যে, যিশু খ্রিষ্ট একবার নাসরত শহরে সাবাথের দিন (শনিবার, বিশ্রামবার) ইহুদিদের উপাসনালয়ে গিয়ে তাদের কিতাব থেকে পাঠ করেন।

১৬ এরপর যিশু নাসরতে গেলেন, এখানেই তিনি প্রতিপালিত হয়েছিলেন৷ তাঁর রীতি অনুসারে বিশ্রামবারে তিনি সমাজ-গৃহে গিয়ে সেখানে শাস্ত্র পাঠ করার জন্য উঠে দাঁড়ালেন৷ ১৭ তাঁর হাতে ভাববাদী যিশাইয়র লেখা পুস্তকটি দেওযা হল৷ তিনি পুস্তকটি খুলে সেই অংশটি পেলেন, যেখানে লেখা আছে: ১৮ ‘প্রভুর আত্মা আমার ওপর আছেন কারণ দীন দরিদ্রের কাছে সুসমাচার প্রচারের জন্য তিনিই আমায় নিযুক্ত করেছেন৷ তিনি আমাকে বন্দীদের কাছে স্বাধীনতার কথা ও অন্ধদের কাছে দৃষ্টি ফিরে পাবার কথা ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন; আর নির্যাতিতদের মুক্ত করতে বলেছেন৷ ১৯ এ ছাড়া প্রভুর অনুগ্রহ দানের বৎসরের কথা ঘোষণা করতেও পাঠিয়েছেন৷ [যিশাইয় 61 : 1-2 ]২০ এরপর তিনি পুস্তকটি গুটিয়ে সেখানকার সহায়কদের হাতে দিয়ে বসলেন৷ সমাজ-গৃহে যাঁরা সে সময় ছিল, তাদের সকলের দৃষ্টি তাঁর ওপর গিয়ে পড়ল৷ ২১ তখন তিনি তাদের বললেন, ‘শাস্ত্রের এই কথা যা তোমরা শুনলে তা আজ পূর্ণ হল৷’ [বাইবেল, লুক ৪:১৬-২১]

যিশু এখানে লুক এর ১৮ ও ১৯ নং পদ পুরাতন নিয়মের যিশাইয় (Isaiah) পুস্তকের ৬১:১-২ অংশ থেকে উদ্ধৃত করেছেন বলে খ্রিষ্টানরা দাবি করে। বাইবেলের বিভিন্ন ভার্সনে ঐ অংশে ব্রাকেট দিয়ে এটাই উল্লেখ করা থাকে। এখানে ক্লিক করে দেখা যেতে পারেঃ https://bit.ly/2LhD2AE

কিন্তু যিশু কি আসলেই পুরাতন নিয়ম থেকে অবিকৃতভাবে পদগুলো উদ্ধৃত করেছেন?আমরা যদি পুরাতন নিয়ম থেকে যিশাইয় পুস্তকের ৬১ নং অধ্যায়ের ১ম ও ২য় পদ দেখি, তাহলে লুক ৪:১৮-১৯ সাথে কিছু পার্থক্য দেখা যায়।

১ প্রভুর দাস বলেন, “প্রভু, আমার সদাপ্রভু, তাঁর আত্মা আমার মধ্যে দিয়েছেন।’ গরীবদের সঙ্গে কথা বলবার জন্য, তাদের ভগ্নহৃদয়ের ক্ষতে বন্ধনী জড়াবার জন্য এবং দুঃখীকে আরাম দেবার জন্য প্রভু আমাকে মনোনীত করেছেন। ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন নির্যাতিতদের ও বন্দীদের জানাতে যে, তারা মুক্ত হচ্ছে। ২ ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর উদারতা কখন দেখা যাবে সে সময়ের কথা ঘোষণা করার জন্য| দুষ্ট লোকদের তাদের শাস্তির সময় ঘোষণা করবার জন্য প্রভু আমাকে পাঠিয়েছেন। ঈশ্বর আমাকে পাঠিয়েছেন দুঃখীদের স্বস্তি দিতে। [BBS][বাইবেল, যিশাইয় (Isaiah) ৬১:১-২]

পার্থক্যগুলো কি চোখে পড়ছে? দক্ষ পাঠক হয়তো ইতিমধ্যেই পার্থক্যগুলো ধরে ফেলেছেন। কিন্তু বাইবেলের বাংলা অনুবাদের নিম্নমানের জন্য অনেকেরই বুঝতে সমস্যা হতে পারে। আমি তাই সংশ্লিষ্ট অংশের অনুবাদ ইংরেজি বাইবেল থেকে দিচ্ছি। যেসব জায়গাগুলোতে যিশুর কথার সাথে Book of Isaiah এর মিল তাছে, সেখানে আমি A, B, C, D দিয়ে দিচ্ছি। আর যেসব জায়গা মিলছে না, সেসব জায়গায় ✘ চিহ্ন দিয়ে দিচ্ছি।

Isaiah 61 : 1-2 — (A) The Spirit of the Lord GOD is upon me,(B) because the LORD has anointed me to bring good tidings to the afflicted;✘ he has sent me to bind up the brokenhearted,(C) to proclaim liberty to the captives, and the opening of the prison to those who are bound;(D) to proclaim the year of the LORD’s favor,✘ and the day of vengeance of our God;✘ to comfort all who mourn;

Luke 4 : 18-19 —(A) “The Spirit of the Lord is upon me,(B) because he has anointed me to preach good news to the poor

(C) He has sent me to proclaim release to the captives✘ and recovering of sight to the blind,(C) to set at liberty those who are oppressed, (D) to proclaim the acceptable year of the Lord”

একটি ছবি থেকে দেখলে আরো পরিষ্কারভাবে বোঝা যাবে। এখানে আমি Isaiah 61 : 1-2 ও Luke 4 : 18-19 এর যেসব জায়গায় মিল আছে, সেখানে একই রং দ্বারা মার্ক করে দিয়েছি। আর যেসব জায়গায় মিল নেই, তার বামে ✘ দিয়েছি। ছবিটি দেখতে ক্লিক করুন এখানেঃ https://bit.ly/2LTpaNQ। আরো পার্থক্য বের করা যেতো, কিন্তু আমি এই ২ অধ্যায়ের লাইনগুলোতে মোটামুটি মিল থাকলেই সেটাকে আর পার্থক্য হিসাবে ধরিনি।

আমরা স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি যে, বাইবেলের যিশু যিশাইয় (Isaiah) পুস্তক পাঠ করার সময় এই ৩টা কথা বাদ দিয়েছেন–-১। he has sent me to bind up the brokenhearted, [বাংলা বাইবেলে -তাদের ভগ্নহৃদয়ের ক্ষতে বন্ধনী জড়াবার জন্য] ২। and the day of vengeance of our God; [দুষ্ট লোকদের তাদের শাস্তির সময় ঘোষণা করবার জন্য] ৩। to comfort all who mourn; [আমাকে পাঠিয়েছেন দুঃখীদের স্বস্তি দিতে]।

আর “and recovering of sight to the blind,” [অন্ধদের কাছে দৃষ্টি ফিরে পাবার কথা ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন] এই কথাটা যোগ করেছেন, যা মূল যিশাইয় (Isaiah) ৬১ নং অধ্যায়ে নেই।

খ্রিষ্টানরা যদি ভিন্ন কোন উৎসমূলক পাণ্ডুলিপি (Source Manuscript) থেকে যিশুর কথার সাথে যিশাইয় (Isaiah) ৬১ এর কথাগুলো কোনভাবে মিলিয়ে দেবার চেষ্টা করে, তাহলেও এটা প্রমাণ হবে যে বাইবেলের উৎসমূলক পাণ্ডুলিপিগুলোতে বিভিন্ন গড়মিল আছে। এ থেকে প্রমাণ হবে যে বাইবেলের উৎসেই গলদ আছে, বাইবেল মোটেই ঈশ্বরের অপরিবর্তনীয় কালাম নয়। আমি এখানে Revised Standard Version (RSV) বাইবেল ব্যবহার করেছি যেখানে বাইবেলের সব থেকে প্রাচীন পাণ্ডুলিপিগুলো থেকে অনুবাদ করা হয়েছে। [২]

একজন ঈশ্বরের নবী ও খ্রিষ্ট কী করে এভাবে ভুলভাবে পুরাতন কিতাব থেকে উদ্ধৃত করেন?এর একাধিক ব্যাখ্যা হতে পারে:

১। বাইবেলের যিশু খ্রিষ্ট একজন ভণ্ড নবী। যার পুরাতন কিতাব সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। তিনি ঈশ্বরের বাণীতে কিছু অংশ নিজে থেকে যোগ করেছেন, আবার বাদও দিয়েছেন। অতএব তিনি বাইবেলের তাওরাতের [২য় বিবরণ (Deuteronomy) ৪:২] আদেশ ভঙ্গকারী।

অথবা,২। বাইবেলের যিশু খ্রিষ্ট একজন ভণ্ড মাসিহ। লুক লিখিত সুসমাচারের ঐ অধ্যায়েরই শুরুর অংশে বলা আছে যে, যিশুর কাছে শয়তান এসে ৪০ দিন ধরে প্রলোভনে ফেলার চেষ্টা করে যাচ্ছিল এবং আরো ভালো সুযোগের অপেক্ষা করে তাঁকে ছেড়ে গিয়েছিল! [লুক ৪:২-১৩; লিঙ্কঃ https://bit.ly/2JgmUhY ] এর একটু পরেই যিশু উপাসনালয়ে গিয়ে নিজে থেকে কিতাবে যোগ-বিয়োগ করলেন। এর মানে যিশু শয়তানের প্রলোভনে পড়েন এবং এর ফলেই পুরাতন কিতাব বিকৃত করে পাঠ করেন। শয়তানের প্ররোচনায় বিকৃতি বিধায় বাইবেলের এ অংশকে বলা যেতে পারে ‘Satanic Verse’।

অথবা,৩। বাইবেলের যিশু খ্রিষ্ট সঠিকভাবেই যিশাইয় (Isaiah) পুস্তক থেকে পাঠ করেছেন। কিন্তু বর্তমানকালের বাইবেলের যিশাইয় ৬১ নং অধ্যায়ে বিকৃতি আছে বলে এই পার্থক্য দেখা যাচ্ছে।

অথবা,৪। যিশাইয় (Isaiah) পুস্তক অবিকৃতই আছে। কিন্তু নতুন নিয়মের লুক ৪:১৮-১৯ এ যিশুর পাঠের ঘটনায় বিকৃতি আছে। ফলে এই পার্থক্য দেখা যাচ্ছে।

অথবা,৫। যিশাইয় (Isaiah) এবং লুক লিখিত সুসমাচার উভয়ই বিকৃত। উভয় পুস্তকই মিথ্যা।.সাধারণ যুক্তি বলে, উপরের ক্ষেত্রগুলোর যে কোনো একটি অবশ্যই সত্য। আর এগুলোর যে কোনো একটি সত্য হবার অর্থ হচ্ছে – খ্রিষ্ট ধর্ম মিথ্যা।

এখানে বাংলা ও ইংরেজি দুই অংশ দিচ্ছি পাশাপাশি:

ইশাইয়া ৬১
“আল্লাহ্ মালিকের রূহ্ আমার উপর আছেন
কারণ তিনিই আমাকে নিযুক্ত করেছেন
যেন আমি গরীবদের কাছে সুসংবাদ তবলিগ করি।
তিনি আমাকে পাঠিয়েছেন যাতে আমি
লোকদের ভাংগা মন জোড়া দিতে পারি
এবং বন্দীদের কাছে স্বাধীনতা
আর কয়েদীদের কাছে মুক্তি ঘোষণা করতে পারি”

লূক ৪:১৮
“আল্লাহ্‌ মালিকের রূহ্‌ আমার উপরে আছেন,
কারণ তিনিই আমাকে নিযুক্ত করেছেন
যেন আমি গরীবদের কাছে সুসংবাদ তবলিগ করি।
তিনি আমাকে
বন্দীদের কাছে স্বাধীনতার কথা,
অন্ধদের কাছে দেখতে পাবার কথা
ঘোষণা করতে পাঠিয়েছেন।”

The Spirit of the Lord GOD is upon me,

because the LORD has anointed me
to bring good news to the poor

he has sent me to bind up the brokenhearted,

to proclaim liberty to the captives,

and the opening of the prison to those who are bound
(or opening of eyes to the blind)
to proclaim the year of the LORD’s favor,

The Spirit of the Lord is upon me,

because he has anointed me
to proclaim good news to the poor.

He has sent me
to proclaim liberty to the captives

and recovering of sight to the blind,

to set at liberty those who are oppressed,
to proclaim the year of the Lord’s favor.”

অভিজ্ঞ অনুবাদক জানে যে কিছু কিছু বাক্য দুই ভাবে অনুবাদ করা যেতে পারে এবং দুটোই ঠিক অনুবাদ বলা যায়। এখানে যে পার্থক্য আছে — “কয়েদীদের কাছি মুক্তি” (ইশাইয়া) এবং “অন্ধদের কাছে দেখতে পাবার কথা” (লূক) আসলে বিভিন্ন সেন্সে একই মূল হিব্রুর অনুবাদ। মূল হিব্রু হল “פְּקַח־קֽוֹחַ পাকাহ্‌-কোয়াহ্‌”, যেটা Brown-Driver-Briggs Hebrew Lexicon অনুযায়ী এই অর্থ বহন করে:

Strong’s # 06495
Pronunciation Guide: p@qach-qowach {pek-akh-ko’-akh}
Root Word: from 06491 redoubled
Outline of Biblical Usage: 1) opening (of eyes), wide

অর্থাৎ “খোলা”; সাধারণত চোখ খোলার ক্ষেত্রে বোঝায়, এবং এখানে subject (কাকে?) উহ্য আছে, উল্লেখ নাই। তাই হযরত লূক গ্রিকে ক্রিয়াপদকে গুরুত্ব দিয়ে “অন্ধ” কে subject নিয়েছে, কিন্তু আমরা যখন সরাসরি হিব্রু থেকে ইশাইয়া অনুবাদ করি subject নেওয়া হয় context থেকে তাতে “কয়েদী” হয়। তাই দেখা যাচ্ছে যে দুটোই একই মূল হিব্রুর অনুবাদ।

ঈসা মসীহের সময়ে ইহুদি মজলিসখানায় যখন কিতাব তেলাওয়াত করা হতো, মূল হিব্রু পাঠ করা হতো প্রথমে, কিন্তু যেহেতু অনেকে সেই পুরানো ভাষায় জানত না, পাঠক এর পরপরই আরামীয় ভাবানুবাদ বলতো, যেটা হিব্রুতে ‘টার্গাম’ תרגום‬ বলা হয়, (>আরবিতে تَرْجَمَة তরজমা)। তাই ঈসা মসীহ অপরিবর্তনীয় সঠিক মূল হিব্রু পড়ার পরে তার তর্জমা দিয়েছে। ভাবানুবাদ দেওয়ার সময়ে ঈসা মসীহ ইশাইয়া ৬১ এর যে পয়েন্টগুলোর কাছে দর্শকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছেন তিনি সেগুলো বলেছেন এবং যে সেন্স তাদের কাছে প্রকাশ করতে চাচ্ছিলেন সেইভাবে বলেছেন। যেমন তখনকার ইহুদিরা ইশাইয়া ৬১ দ্বিতীয় আয়াতের শেষ যে কথা আছে “আমাদের আল্লাহর প্রতিশোধের দিনের কথা ঘোষণা করতে পার” সেটা শুনতে বেশি পছন্দ করত, কারণ সেখানে অন্যান্য জাতির উপরে আল্লাহর গজবের কথা বলা হচ্ছিল তারা মনে করত। তাই ঈসা ইচ্ছা-করে সেই অংশ পড়া ঠিক আছে শেষ করেছে এবং সেটা বলেন নি। এবং হযরত লূক ঈসার হিব্রু তেলাওয়াত উল্লেখ না করে বিশ্বস্তভাবে ঈসার তরজমার অনুবাদ দিয়েছে।

মূল কথা হলো যে ঈসা মসীহ তার ব্যাখ্যা দেওয়ার পাশাপাশি অবশ্যই মূল হিব্রুও পাঠ করেছে, তাই এখানে কেউ ‘কিতাব পরিবর্তন’ করার অভিযোগ বলতে পারেন না।

আল কুরআনে উল্লেখিত ঈসা (আ.) এর ব্যাপারে এমন কোনো জটিলতা দেখা যায় না। আল কুরআনের ঈসা (আ.) আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রেরিত একজন নবী এবং মাসিহ। আল্লাহ তা’আলা তাঁকে শয়তান থেকে রক্ষা করেছেন। আল্লাহ তাঁকে কিতাব, হিকমাত, তাওরাত ও ইঞ্জিল শিক্ষা দিয়েছেন। কাজেই তাঁর পক্ষে পুরাতন কিতাব বিকৃতভাবে পড়া সম্ভব নয়।

হ্যাঁ, ঈসাকে তাওরাত ও ইঞ্জিল শিক্ষা দিয়েছে (যেগুলো কোরআন অনুযায়ী এখনো অপরিবর্তিত) কিন্তু আপনারা সেই প্রকাশ্য প্রমাণ এড়িয় চলে ঈসার কাছে আল্লাহর প্রদত্ত সেই শিক্ষা শুনছেনও, শুনতেও চান না।

“অতঃপর সে [ইমরানের স্ত্রী] যখন তা প্রসব করল, বলল, ‘হে আমার প্রভু, আমি তো কন্যা প্রসব করেছি। আর আল্লাহই ভালো জানেন সে যা প্রসব করেছে তা সম্পর্কে। ‘আর পুত্র সন্তান কন্যা সন্তানের মত নয় এবং আমি তার নাম রেখেছি মরিয়ম। আর নিশ্চয়ই আমি তাঁকে ও তাঁর সন্তানদেরকে বিতাড়িত শয়তান থেকে আপনার আশ্রয় দিচ্ছি’।”

[আল কুরআন, আলি ইমরান ৩:৩৬].“যখন ফেরেশতারা বললোঃ হে মরিয়ম, আল্লাহ তোমাকে তাঁর এক বাণীর সুসংবাদ দিচ্ছেন, যার নাম হলো মাসিহ, মরিয়মের ছেলে ঈসা। সে দুনিয়া ও আখিরাতে মহাসম্মানের অধিকারী এবং আল্লাহর ঘনিষ্ঠদের অন্তর্ভূক্ত। আর সে মানুষের সাথে কথা বলবে দোলনায় ও পরিণত বয়সে এবং সে নেককারদের অন্তর্ভুক্ত। মরিয়ম বলল, ‘হে প্রভু, কীভাবে আমার সন্তান হবে? কোন পুরুষ তো আমাকে স্পর্শ করেনি’! [আল্লাহ] বললেন, ‘এভাবেই’; আল্লাহ যা চান সৃষ্টি করেন। তিনি যখন কোন বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেন, তখন তাকে শুধু বলেন, ‘হও’। ফলে তা হয়ে যায়। আর তিনি তাঁকে শিক্ষা দেবেন কিতাব, হিকমাত, তাওরাত ও ইঞ্জিল’।[আল কুরআন, আলি ইমরান ৩:৪৫-৪৮].অতএব বাইবেল একটি বিকৃত গ্রন্থ এবং খ্রিষ্ট ধর্মালম্বীদের যিশু একজন ভণ্ড নবী এবং ভণ্ড মাসিহ (False Messiah / False Christ)। আল কুরআনের ঈসা (আ.) একজন সত্য নবী এবং সত্য মাসিহ, যাঁকে স্বয়ং আল্লাহ তা’আলা কিতাব শিক্ষা দিয়েছেন। কাজেই খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি মিথ্যাকে পরিত্যাগ করে সত্যকে গ্রহণ করার। বিকৃত কিতাব ও মিথ্যা মাসিহ পরিত্যাগ করে সত্য কিতাব ও সত্য মাসিহকে অবলম্বন করার।

আপনার কথা এখানে আপনার নিজের কোরআনের স্পষ্ট কথার সঙ্গে মিলে না, ইতিহাসের সঙ্গেও মিলে না। কোরআন ইঞ্জিলের নির্ভরযোগ্যতার সমর্থন করে, ইতিহাসও ইঞ্জিলের নির্ভরযোগ্যতা সমর্থন করে। কিন্তু আপনি আল্লাহর প্রদত্ত নবী ঈসা মসীহের শিক্ষা প্রত্যাখ্যান করছেন।

===================================

গীতসংহিতা পুস্তকটির লেখক কারা? দাউদ ও সলোমন এর লেখক এমন কোন ঐতিহাসিক প্রমাণ আছে?

গীতসংহিতা পুস্তকের লেখক মূলত দাউদ (৭৬টি), আসফ (১২টি), কারুনের বংশের (১২টি), মূসা (১টি), ইষ্রাহীয় এথন (১টি), ইষ্রাহীয় হেমন (১টি), ও অন্যান্য নামহীন ৪৬টি। সোলায়মান জবুরের কিছু লিখেননি; তিনি মেসাল কিতাব লিখেছেন। ঐতিহাসিক প্রমাণ বলতে ডেড সি স্ক্রোলের আগে কেউ কেউ মনে করতো যে সেই লেখকের নামগুলো হয়তো আগে মূলে ছিল না, কিন্তু ডেড সি স্ক্রোলে প্রমাণ হলো যে জবুর শরিফের সেই নাম দিয়ে আখ্যায়িত ছিল প্রথম থেকেই। দাউদ যে সেই জবুর শরীফের বেশির ভাগ কাওয়ালী লিখেছে সেটা ঈসা মসীহ বলেছে, কোরআনও বলেছে, এবং এর বিপরীতে এরা কিছু বলেন নি, তাই আমরা যদি তাদের কথা বিশ্বাস করি তাহলে জবুর শরিফের সততাও বিশ্বাস করতে হয়।

কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমরা শুনতে চাই! নিচের ফর্ম দিয়ে যোগাযোগ করুন:

Enable javascript in your browser if this form does not load.

Comments are closed.