ইউহোন্না ১:২১ – ইয়াহিয়া কি ইলিয়াস ছিলেন?

ইউহোন্না ১:২১—“তরিকাবন্দিদাতা ইয়াহিয়া কি ইলিয়াস ছিলেন (মথি ১১:১৪; ১৭:১৭:১০-১৩) নাকি তিনি ইলিয়াস ছিলেন না (ইউহোন্না ১:২১)?”

তরিকাবন্দিদাতা ইয়াহিয়া আক্ষরিক অর্থ ইলিয়াসের অবতার অবশ্যই ছিলেন না, কিন্তু তিনি নবী মালাখি এবং জিবরাইলের ভবিষ্যদ্বানী পূরণ করেছেন যে ইলিয়াসের মত একজন নবী এসে মসীহ্র পথ প্রস্তুত করবেন। ইয়াহিয়ার জন্মের আগে, জিব্রাইল ইয়াহিয়ার পিতা জাকারিয়ার কাছে এসে বললেন যে তার সন্তান “নবী ইলিয়াসের মত মনোভাব ও শক্তি নিয়ে সে মাবুদের আগে আসবে…লোককে সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত করবে।” (লূক ১:১৭)। জিব্রাইলের কথা অনেকটা নবী মালাখির কথা মত, যে মাবুদের দিনের আগে একজন ইলিয়াস এসে তার পথ প্রস্তুত করবে।

ফরীশীগণ এই ভবিষ্যদ্বানী ভুলব্যাখ্যা করে মনে করতেন যে ইলিয়াস নিজেই ফিরে আসবেন। তাই ইয়াহিয়া তাদের খুলাখুলি বললেন, যে তিনি সেই আক্ষরিক অর্থে ইলিয়াস নন। ঈসা মসীহ্ বরং বুঝতে পেরেছেন যে ইয়াহিয়া সেই ভবিষ্যদ্বানী পূরণ করেন যে ইলিয়াসের মত একজন আসবেন।

কোরআন শরীফে তেমন ধরনের জটিলতা রয়েছে। কোরআনের কিছু কিছু আয়াত কোন সাফায়াত পুরোপুরি অস্বীকার করেন (২:১২২-১২৩; ২:২৫৪; ৬:৫১; ৮২:১৮-১৯), আবার কিছু আয়াতে বলা হয় যে সাফায়াত সম্ভব হতে পারে (২০:১০৯; ৩৪:২৩; ৪৩:৮৬; ৫৩:২৬)।

লূক ১৪:২৬ – বাবা-মাকে ঘৃণা করা?

লূক ১৪:২৬—“ঈসা মসীহ্‌ কি এখানে বাবা-মাকে ঘৃণা করতে বলেছিলেন?”

উপরোক্ত প্রশ্ন থেকে বোঝা যায় সমালোচক প্রাচীন সাহিত্যের সাথে অপরিচিত। এই rhetorical device-কে বলা হয় hyperbole, এবং প্রাচীন লেখায় তা খুব বেশী দেখা যায়। ঈসা মসীহ্‌র যুগে সবাই বুঝেছিল যে তিনি আক্ষরিক ‘ঘৃণা’ বলেননি বরং “তুলনামূলক ভাবে চেয়ে কম ভালবাসা”। কিতাবুল মোকাদ্দেসের অন্যান্য জায়গায় এই hyperbole –এর উদাহরণ পাওয়া যায় যেখানে সুস্পষ্টই আক্ষরিক ঘৃণার কথা বলা হচ্ছে না বরং শুধু “তুলনামূলক ভাবে কম মহব্বত করা”, যেমন পয়দায়েশ ২৯:৩০-৩১। আরেকটি উদাহরণ আছে লূক ১৬:১৩:

“কোন গোলাম দু’জন কর্তার সেবা করতে পারে না, কারণ সে একজনকে ঘৃণা করবে ও অন্যজনকে ভালবাসবে, কিংবা সে একজনের প্রতি মনোযোগ দেবে ও অন্যজনকে তুচ্ছ করবে। আ্লাহ্ ও ধন-সম্পত্তি এই দু’য়েরই সেবা তোমরা একসংগে করতে পার না।” (লূক ১৬:১৩)

এখানে অবশ্যই আক্ষরিক ঘৃণা বোঝানো হচ্ছে না, কারণ তিনি সাধীনভাবে দু’জন মালিক পছন্দ করার কথা বলছেন। এই hyperbole–এর আরেকটি উদাহরণ দেওয়া যায় গ্রীক লেখা কোর্পুস হের্মেটিকুম থেকে:

“প্রিয় সন্তান, প্রথমে নিজের শরীরকে ঘৃণা না করলে নিজেকে মহব্বত করতে পারবে না” (পইমান্দ্রেজ ৪:৬)

Poetae Lyrici Graeci বইয়ের একটি যুদ্ধের গানে বলা হয়েছে যে মানুষ:

“স্পার্টা শহরের মর্জাদার জন্য নিজের জীবনকে নিজের শত্রু মনে করতে হবে”

এখানে আক্ষরিক ঘৃনা বলা হচ্ছে?…

লূক ৩:৩৫-৩৬—“কীনান নাকি আরফাখশাদ?”

লূক ৩:৩৫-৩৬—“শালেখের আব্বা কীনান (লূক ৩:৩৫) নাকি আরফাখশাদ (পয়দায়েশ ১১:১২)?”

এটা দুইভাবে ব্যাখ্যা করা যায়। অনেকে বলেন যে পয়দায়েশে “জন্ম দেওয়া” এবং “পিতা” বোঝাতে হয় শুধু পিতা নয় বরং পিতার পিতা বা দাদা, এবং তাই কীনান ছিলেন শালেখের পিতা এবং আরফাখশাদ ছিলেন এর দাদা। এর সমর্থনে তওরাতের গ্রীক পাণ্ডুলিপি অনুযায়ী আরফাখশাদের বয়স ১৩৫ বছর ছিল যখন শালেখের জন্ম হয়।

আবার অনেকে বলেন যে লূক কিতাবের সবচেয়ে প্রাচীন পাণ্ডুলিপির মত বাড়তি কীনান দেওয়া উচিত না। এর সমর্থনে ঐতিহাসিক ফ্লাভিয়ুস যোসেফুস এবং জুলিয়স আফ্রিকানুস তাদের বংশতালিকায় দ্বিতীয় কীনান বাদ দিয়েছেন। এই ব্যাখ্যা অনুযায়ী, একজন প্রাচীন লেখক কিতাবের অনুলিপি করতে গিয়ে ভুল করে কীনানের নাম দুই বার লিখেছেন।

    ১.

লূক ১:৩২ – মসীহ্‌ কি দাউদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী?

লূক ১:৩২—“এই আয়াতের কথায়, ঈসা মসীহ্‌ ছিলেন বাদশাহ্‌ দাউদের সিংহাসনের উত্তরাধিকারী, কিন্তু ঈসা মসীহ্‌র পুর্বপুরুষ যিকনিয় (মথি ১:১১) বংশধরের শেষ রাজা হয়ে বহিষ্কৃত হয়েছেন (ইয়ারমিয়া ৩৬:৩০), তাই সেই সূত্র অবৈধ ।”

হযরত ঈসা মসীহ্‌র বংশ শুধু তার পিতা ইউসুফের মাধ্যমে নয় বরং তার মা মরিয়মের মধ্যেও (লূকের বংশতালিকা), এবং সেটা যিকনিয় ছাড়া অন্য এক লাইনে। আল্লাহ্‌র ফেরেশতা জিবরাইল আবার এই লাইনের বৈধতা সমর্থন করে বলেছেন: “মাবুদ আল্লাহ্ তাঁর পূর্বপুরুষ বাদশাহ্ দাউদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন” (লূক ১:৩২)।

মার্ক ১৬:১৪-১৮ – প্রকৃত ঈসায়ী হওয়ার পরীক্ষা?

মার্ক ১৬:১৪-১৮—“এই আয়াতের পরীক্ষা অনুযায়ী, একজন প্রকৃত ঈসায়ী হতে হলে সব ভাষায় কথা বলতে হবে এবং বিষ খেয়ে বেঁচে থাকতে হবে।”

ইঞ্জিলের সমালোচকগণ হযরত ঈসা মসীহ্র এই কথা ভুলব্যাখ্যা করে সেটাকে একটি পরীক্ষা বানিয়েছে – প্রকৃত ঈসায়ী হতে হলে, এই চ্যালেঞ্জে দাঁড়াতে হবে। কিন্তু একই যুক্তি অনুযায়ী, মুসলমানদের জন্য তেমন একটা ‘পরীক্ষা’ রয়েছে – হযরত মুহাম্মদ (স) বলেছেন, “যে চুপ থাকে সে নাজাত পায়।” – অর্থাৎ এই যুক্তিতে, যারা জীবনে একবারও মুখ খুলে, তারা জাহান্নামী। কিন্তু এই দুই ক্ষেত্রে আসল ব্যাখ্যা হচ্ছে যে প্রকৃত ঈমানদারের জীবনে এই ধরনের প্রবণতা বেশী দেখা যায় (চুপ থাকা, বিভিন্ন ভাষায় কথা বলা এবং বিষ খেয়ে বেঁচে থাকা)।

এই আয়াতে বলা হয়নি যে প্রত্যেক ঈমানদারের মধ্যে এই অলৌকিক গুণ সবসময় দেখা যাবে, বরং বলা হচ্ছে যে ঈমানদারদের মধ্যে এই চিহ্ন দেখা যাবে। এটা নিশ্চয় কোনো ‘falsification test’ (δοκιμάζω) নয়। তার সাহাবীদের জন্য একটি প্রতিজ্ঞা হিসেবে ঈসা মসীহ্ এই কথা বলেছেন, যে শয়তান যাই করেন না কেন, তিনি ঈমানদারদের উপর জয়লাভ করবেন না। প্রথম ঈসায়ী জামাতের মধ্যে এই চিহ্ন দেখা দিয়েছে – হযরত পৌলকে একটি বিষাক্ত সাপ কামড়াল কিন্তু তার ক্ষতি হয়নি (প্রেরিত ২৮:৩-৯) এবং প্রথম জামাতের উদ্বোধনে ১২জন সাহাবী অলৌকিকভাবে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলছিলেন যখন পাক-রূহ্ তাদের উপর নেমে গেলেন। আমরা ইঞ্জিল শরীফ থেকে জানি যে বিভিন্ন ভাষা কথা বলার রূহানী দান সবাইকে দেওয়া হয়নি (১ করিন্থীয় ১২:১০); তেমনই ভাবে অন্যান্য চিহ্ন প্রত্যেক ঈমানদারের জন্য নয়।

দ্বিতীয়ত, লোক দেখানোর জন্য আল্লাহ্ তাৎক্ষণিক কেরামতী করেন না। যখন মরুভূমিতে শয়তান হযরত ঈসার কাছে একটি “falsification test”-এর দাবী করলেন, ঈসা মসীহ্ কিতাবের তৌরাত শরীফের একটি উদ্ধৃতি দিয়ে উত্তর দিলেন, “তোমার মাবুদ আল্লাহ্কে তুমি পরীক্ষা করতে যেয়ো না।” (মথি ৪:৭; মথি ১৬:৪)। আবার ইহুদী নেতারা যখন ঈসাকে একটি চিহ্ন দেখাতে বলল, তিনি তাদের কোন চিহ্ন দেখাতে চাননি। তিনি অবশ্যই অনেক চিহ্ন দেখাতে পারতেন (এবং অন্যান্য সময়ে তিনি প্রায়ই কেরামতী কাজ করতেন), কিন্তু লোক দেখানোর চিহ্ন করেননা। তেমনভাবেও হযরত মুহাম্মদের সমালোচকগণ তাকে একটি কেরামতী কাজ দেখাতে বলল, কিন্তু তিনি কখন তা করেননি। ঈসা মসীহ্র শিক্ষা অনুযায়ী, কেরামতী কাজ দ্বারা ঈমানদার এবং অ-ঈমানদার বোঝা যায় না, কারণ—

“…অনেক ভণ্ড মসীহ্ ও ভণ্ড নবী আসবে এবং বড় বড় চিহ্ন-কাজ ও কুদরতি দেখাবে যাতে সম্ভব হলে আল্লাহ্‌র বাছাই করা বান্দাদেরও তারা ঠকাতে পারে।” (মথি ২৪:২৪)

অর্থাৎ ঈসা মসীহ্ এই ধরণের ঈমানের পরীক্ষা সমর্থন করেননি।

তৃতীয়তঃ, “নতুন ভাষা” এবং “সব ভাষা” এক না। মার্ক ১৬:১৭ আয়াতে “καιναι” শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যার অর্থ “অজানা, নতুন”। অনেকের ব্যাখ্যা অনুযায়ী সেটা বোঝাচ্ছে দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে তবলিগ করতে গিয়ে নতুন ভাষা শিক্ষার গুণ। অন্য ব্যাখ্যা অনুযায়ী, এটা হচ্ছে একটি পুরোপুরি রূহানিক দান বা ‘বেহেশতি ভাষা’ যা আল্লাহ্ দান করেন।

মথি ২১:১২ – ঈসা মসীহ্‌ কোন্‌ দিনে বাইতুল মোকাদ্দসে গিয়েছিলেন?

মথি ২১:১২—“ঈসা মসীহ্‌ কোন্‌ দিনে বাইতুল মোকাদ্দসে বিক্রেতাদের তাড়িয়ে দিলেন—জেরুজালেমে ঢুকবার প্রথম দিনে (মথি ২১:১২) নাকি দ্বিতীয় দিনে (মার্ক ১১:১-১৭)?” এবং ডুমুর গাছটি তিনি কখন ধমক দিলেন? (দেখুন মার্ক ১১:১২)”

ঘটনাগুলো এই ক্রমে ঘটেছে:

প্রথম দিনে : ঈসা মসীহ্‌ একটি গাধার পিঠে করে জেরুজালেমে প্রবেশ করলেন, অল্পক্ষণের জন্য বাইতুল মোকাদ্দসে গেলেন, এবং সন্ধ্যায় আবার বেথানিয়া গ্রামে ফিরে গেলেন।

দ্বিতীয় দিন : ঈসা মসীহ্‌ ভোরে উঠে জেরুজালেমে যাওয়ার পথে ডুমুর গাছটিকে ধমক দিলেন, এবং তারপর বাইতুল মোকাদ্দসে বিক্রেতাদের তাড়িয়ে দিলেন।

মার্ক এবং লূকে এটা বেশ পরিষ্কার, কিন্তু মথি তার লেখায় বাইতুল মোকাদ্দসের ঘটনা রাখলেন জেরুজালেম প্রবেশ এবং ডুমুর গাছের ঘটনাগুলোর মাঝখানে। মথিতে এইভাবে আছে কারণ এই সমাচারে ঘটনাগুলো সাজানো হয়েছে প্রধানত বিষয় অনুসারে, সময়ের ক্রম অনুসারে নয়। অন্যান্য অনেক প্রাচীন লেখায় এইভাবে করা হয়। ঈসা মসীহ্‌র জেরুজালেম প্রবেশ এবং বাইতুল মোকাদ্দস পরিষ্কার করার ঘটনাগুলোর গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক মথি এখানে দেখাতে চাচ্ছিলেন, যার কারণে তিনি মাঝখান থেকে ডুমুর গাছের ঘটনা সরিয়ে দিলেন।

মথি ২১:৭ – কয়টা গাধা?

মথি ২১:৭—“ঈসা মসীহ্‌ কি একটা গাধা ও গাধীর বাচ্চার পিঠে করে জেরুজালেমে প্রবেশ করলেন নাকি শুধু একটি গাধা ছিল যেমন মার্ক ১১:৭ এবং লূক ১৯:৩৫-এ আছে?”

মার্ক এবং লূক শুধু উল্লেখ করেছেন যে গাধীর বাচ্চা উপর ঈসা চড়ল, কিন্তু মথি এ-ও উল্লেখ করেছিলেন যে সেই গাধীর বাচ্চা শান্ত রাখার জন্য তার মা সঙ্গে করে নিয়ে নেয়া হল। জাকারিয়া ৯:৯ এর ভবিষ্যদ্বানী পূরণ করার জন্য ঈসা মসীহ্ ইচ্ছাকৃতভাবে গাধীর বাচ্চার উপরে চড়ে আসলেন।

মথি ১৫:২৬ – বিদেশিনীকে ‘কুকুর’ বলা?

<h2 class=”objection”>মথি ১৫:২৬—“ঈসা মসীহ্‌ কেমন করে একজন বিদেশী মহিলাকে ‘কুকুর’ বলতে পারে?”</h2>
তখনকার সমাজে দুই ধরনের কুকুর ছিল—একটা খারাপ (বন্য ও নোংরা), আরেকটি ভাল যারা মেষ দেখাশোনা করতে খুব গুণী ছিল। ইহুদীরা প্রায়ই অ-ইহুদীদের গালি হিসেবে “κύων” (কুওন) বলতেন, যাকে দিয়ে বোঝানো হত রাস্তার নোংরা কুকুর। কিন্তু এখানে মসীহ্ সেই সব্দ ব্যবহার করেননি, তিনি বলেছিলেন “κυνάριον” (কুনারিওন) অর্থাৎ গৃহপালিত বাচ্চা-কুকুর যারা ঘরের মধ্যে থাকত, সম্ভবত মেষ-পালকদের বাসায়। বাংলায় যেমন “অমুক প্রাণীর-বাচ্চা” একটি গালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়, গ্রীক ভাষায় কিন্তু সেরকম অর্থ নেই, “বাচ্চা-প্রাণী” একটি আদরের ডাক হিসেবে ব্যবহার করা হত। যদি এটা একটি গালি হত, তাহলে মহিলাটি অবশ্য রেগে যেত বা চলে যেত; কিন্তু এই কথা শুনবার পরেও তিনি ঈসার সাহায্য চেয়েছিলেন, এবং শেষ ঈসা মসীহ্ মহিলাটির ঈমান প্রশংসা করেছিলেন।<p>
এখানে ঈসার পুরো গল্প দেখতে হবে—তিনি বাড়ীর বিভিন্ন ভাগ (মালিক, সন্তান, গৃহপালিত পশু, ইত্যাদি) দিয়ে বোঝাচ্ছে যে তার তবলিগ কাজের ক্ষেত্রেও প্রথমত ইহুদীদের কাছে তার প্রচার করার দায়িত্ব ছিল। <p>
কোরআন শরীফও বিভিন্ন খারাপ জাতি বা মানুষকে পশুর সঙ্গে তুলনা করা হয়—“কুকুর” (৭:১৭৫-১৭৭), “পশু” (৮:২২,২৫), এবং “গাধা” (৬২:৫)।

মথি ১৬:১৭ – বেহেশত নাকি আন্দ্রিয়?

<h2 class=”objection”>মথি ১৬:১৭—“শিমোন পিতর কিভাবে জানতে পারলেন যে ঈসা ছিলেন সেই মসীহ্‌–সরাসরি বেহেশত থেকে, নাকি আন্দ্রিয়র মাধ্যমে (ইউহোন্না ১:৪১)?”</h2>
এটার ব্যাখ্যা বেশ সহজ—আন্দ্রিয় প্রথমে তাকে বলেছিলেন যে ঈসা ছিলেন মসীহ্, কিন্তু পিতর তার কথা তখন বিশ্বাস করেননি। পরে, হযরত ঈসার সঙ্গে সঙ্গে চলার পরে আল্লাহ্ তার অন্তরে প্রকাশ করলেন যে ঈসা সত্যই মসীহ্ ছিলেন। পিতরের আদর্শ খুব সুন্দর, কেমন করে একজন গ্রহণ করতে পারে যে সত্যই, ঈসা হচ্ছেন আল্লাহ্‌র সেই ওয়াদাকৃত এবং মনোনীত নাজাতদাতা।

ইউনুসের চিহ্ন – ঈসা কি মরেছিলেন?

মথি ১২:৪০—(দ্বিতীয় প্রশ্ন) “যেহেতু ইউনুস নবী জীবিত অবস্থায় মাছের পেটে ছিল, সেহেতু ঈসা মসীহ্‌ও নিশ্চয়ই কবরে জীবিত ছিল, তাই ঈসা ক্রুশে মারা যাননি”

ঈসার কথার নির্দিষ্ট কিছু কিছু অংশ দেখালে এবং অন্যান্য অংশ লুকিয়ে রাখলেই এই যুক্তি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। তাই আসুন পুরো আয়াত দেখি:

ইউনুস যেমন সেই মাছের পেটে তিন দিন ও তিন রাত ছিলেন ইব্‌নে-আদমও তেমনি তিন দিন ও তিন রাত মাটির নীচে থাকবেন।” (মথি ১২:৪০)

আহমেদ দীদাত চতুর ভাবে এই আয়াত থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ বাদ দিলেন—তিনি আয়াতটি এইভাবে দিলেন: “ইউনুস যেমন …ছিলেন, ইবনে আদমও তেমনি…থাকবেন।” এইভাবে তিনি এই তুলনার মূল বিষয় কেটে ফেললেন, যা হল ১) সময়ের মেয়াদ – তিনি দিন তিন রাত, এবং ২) সেই সময়ে একটি ঘেরা জায়গায় থাকা । শুধুমাত্র এই দুই সাদৃশ্যর কথা ঈসা মসীহ্ স্পষ্টভাবে বলেছিলেন–এর বাইরে কোনো সাদৃশ্য থাকতে পারে, কিন্তু সেটা শুধু ব্যাখ্যাকারীর অনুমান হবে।