‘ঈসা’ নামের অর্থ

#খ্রীষ্টান_ভাইদের_প্রতি_যীশু_সম্পর্কে_কিছু_প্রশ্ন।

প্রশ্ন ১ – আপনারা বলেন ‘ঈসা’ শব্দের অর্থ নাজাত দাতা, মুক্তিদাতা, পরিত্রাণ দাতা। বলুনতো এই অর্থটি কোন বিধানে আছে? ঈসা শব্দটি আরবি। আরবি কোন অভিধানে ঈসা শব্দের অর্থ নাজার দাতা নেই এ বিষয়ে কী বলবেন?

“কোন বিধানে আছে?” আপনি কি ‘অভিধান’ বোঝাতে চাচ্ছিলেন? অভিধানে ব্যক্তির নাম (নামবাচক বিশেষ্য) থাকে না।

আমি যদি বলি “মুহাম্মদ” শব্দের অর্থ “প্রসংশিত”, সেটা কি ঠিক হবে? হ্যাঁ, যদিও “মুহম্মদ” বাংলা অক্ষরে বাংলা অভিধানে পাওয়া না যায়। কেন? কারণ নিয়ম হল নামের মূল ভাষায় দেখতে হয়, অনুবাদে না। আমি আরবি অভিধানে “محمد‎” খোঁজ করে বাংলা ‘মুহাম্মদ’ নামের অর্থ পাবো। অনেক ক্ষেত্রে নামের উৎপত্তির মূল ভাষায় সার্চ না করলে ভুল অনুবাদ পাবেন, যেমন “আব্দুর রব” দ্বিতীয় নামের অর্থ “শব্দ” নয় বরং “প্রভু”।

সবাই জানে যে ঈসা মসীহের ভাষা আরবি নয় বরং গ্রিক ও হিব্রু/আরামিয়, তাই আরবিতে খোঁজ না করে গ্রিক ও হিব্রুতে নামের অর্থ খোঁজ করতে হয়। সেখানে পাবেন যে ঈসা (ישוע‎) এর নামের অর্থ “নাজাতদাতা”।

প্রশ্ন ২ – মসিহ শব্দের অর্থ বলা হয়েছে, মনোনীত ব্যক্তি, এটাও একই রকম। কোন আরবী অভিধানে এই অর্থ লেখা নেই। এটাও আপনাদের মনগড়া বানোয়াট অর্থ । এভাবে বিভ্রান্তির কারণ কি?

উপরের উত্তর দেখুন। মূল ভাষায় শব্দের অর্থ খোঁজ করা বিভ্রান্তির কিছু না, সেটা সাধারণ জ্ঞানের ব্যাপার। তবুও সেটা আরবি অভিধানে ‘মনোনীত’ অর্থে পাওয়া যায় (যদিও উইকি সোর্স খুব একটা নির্ভরযোগ্য নয়)

প্রশ্ন ৩ – যীশু যদি প্রভুই হন; তাহলে তার আবার বংশ তালিকা প্রয়োজন হয় কেন?

প্রশ্ন ৪

– যীশু যদি আল্লার ছেলে হয়; তাহলে তার বংশ মানুষের সাথে লাগবে কেন?

প্রশ্ন ৩ ও ৪ একই রকম প্রশ্ন। আপনি মনে হয় বুঝতে পারছেন না যে ‘আল্লাহর সন্তান’ রুপক কথা, বিনা পিতায় পাক-রুহের শক্তিতে ঈসার জন্ম হলেও তার মা সাধারণ মানুষ ছিল এবং এইজন্য তার মায়ের বংশতালিকা দেওয়া অসাভাবিক কিছু না।

ঈসা শব্দের অর্থ নাজাতদাতা হিব্রু প্রাচীন কোন অভিধান থেকে দেখান 

গ্রিক ভাষায় ঈসার নাম ইয়েসুস Ἰησοῦς যেটা মূল হিব্রু/আরামীয় יְהוֹשֻׁעַ‬ ‘যশুয়া’/’ইয়েহোশুয়া’ থেকে। হযরত মূসা তাঁর শিষ্য হোশিয়াকে নতুন নাম দিয়েছে “ইয়েহোশুয়া” (শুমারি ১৩:১৬), এবং মাঝে মাঝে সেটা সংক্ষেপে ישוע‎ ইয়েশুয়া লেখা হতো (যেমন নহিমিয়া ৮:১৭)। মূল ইয়েহোশুয়া মূলত দুটি অংশ আছে – হিব্রু মূল שיע মানে “নাজাত করে” এবং তার আগে “ইয়েহ” মানে ইয়াহ্‌ওয়েহ্‌ বা আল্লাহ্‌, একসাথে “ইয়াহ্‌ওয়েহই নাজাত” বা “নাজাতকারী”। এখানে ১৮ শতাব্দির একটি অভিধানের (Gesenius Lexicon) ভুক্তি আছে:

অন্য অভিধানের সংজ্ঞা এখানেও পাওয়া যায়, যেখানে “the LORD is salvation” অর্থ আছে। ইহুদি হিব্রু পন্ডিত Dr. David H. Stern লিখেছেন:

The Hebrew word for “he will save” is “yoshia‘,” which has the same Hebrew root (yud-shin-‘ayin) as the name Yeshua (yud-shin-vav-‘ayin). Thus the Messiah’s name is explained on the basis of what he will do. Etymologically the name Yeshua is a contraction of the Hebrew name Y’hoshua (English “Joshua”), which means “YHVH saves.” It is also the masculine form of the Hebrew word “yeshu‘ah,” which means “salvation.” …

ইঞ্জিল শরিফ থেকেও পরিস্কারভাবে বোঝা যাচ্ছে যে ঈসার নামের অর্থ নাজাতদাতা:

[ফেরেশতা বললেন:] “তুমি তাঁর নাম ঈসা রাখবে, কারণ তিনি তাঁর লোকদের তাদের গুনাহ্ থেকে নাজাত করবেন।” (মথি ১:২১)

কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমরা শুনতে চাই! নিচের ফর্ম দিয়ে যোগাযোগ করুন:

Enable javascript in your browser if this form does not load.

Comments are closed.