সমালোচকদের দাবির মূল সমস্যা

সমালোচকদের দাবির মূল সমস্যা

ইদানিং জাকির নায়েক ও আহমেদ দিদাতের মত কিছু টেলিভিশন প্রচারকগণ প্রচার করে যাচ্ছে যে ইঞ্জিল শরীফ পুরোপুরি পরিবর্তন হয়েছে ও ঈসা মসীহ্‌ আসলে কখনও ক্রুশবিদ্ধ হননি। এই ধরনের শিক্ষা দিয়ে এরা কোরআন, কোরআনের শ্রেষ্ঠ তাফসীরকারী, ইতিহাস ও যুক্তির বিপরীত কথা বলে, যেমন করে এই বইতে প্রমাণ করা হয়। এদের ভুলব্যাখ্যার মূল সমস্যা হল যে তাতে সেই মহান নবী ঈসা মসীহের জীবন অর্থহীন ও নিষ্ফল হয়ে যায়, তাতে ঈসার প্রিয় সাহাবীগণকে অধার্মিক ও অসৎ বলতে হয়, এবং শেষে আল্লাহ্‌তা’লাকে দুর্বল ও বলহীন বলতে হয় কারণ তাঁর পাঠানো নবীর কাজ তিনি সফল করতে পারেননি।

সমস্যা #১: তাদের কথায় হযরত ঈসাকে অপমান করা হয়

সকল মুসলমান ও ঈসায়ী বলেন যে ঈসা মসীহ্‌ ছিলেন অন্যতম শ্রেষ্ঠ নবী, মানব ইতিহাসের একজন মহৎ ব্যক্তি। কিন্তু এইসব প্রচারক, যারা দাবী করেন যে তারা ঈসা মসীহ্‌কে বিশ্বাস করেন, তাদের বিশ্বাস অনুযায়ী ঈসা নবীর জীবন ও কাজ সব দিক দিয়ে পুরোপুরি নিষ্ফল ছিল। মসীহ্‌ সম্পর্কে তাদের ধারণাকে “নিষ্ফল নবী মতবাদ” বলা যায়। অন্য আরো ছোট নবীরা, যেমন হযরত দাউদ (আঃ), হযরত ইশাইয়া (আঃ), হযরত ইউনুস (আঃ) ও হযরত ইয়াকুব (আঃ) সফল হল, কিন্তু এদের কথা বিশ্বাস করলে, হযরত ঈসা একটি স্থায়ী বিশ্বাসী দল প্রতিষ্ঠিত করতে ও স্থায়ী কিতাব রাখতে সফল হননি।

সমস্যা #২: তাদের কথায় হযরত ঈসার সাহাবীদের অপমান করা হয়

শোনা যায় যে হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)-এর সাহাবা তাঁকে নিয়ে কোন মিথ্যা বলতে পারেনি যেহেটু এরা আল্লাহ্‌র একজন রাসূলের কাছে ছিল। কোরআন শরীফে ঈসা মসীহের এই সাহাবীদের ধার্মিক “আত্মসমর্পনকারী” বলা হয়। তাহলে কেমন করে বলা যায় যে এরা মসীহ্‌র বাণী বিকৃত করেছিলেন এবং হযরত ঈসার বিষয় মিথ্যা বলেছিলেন? সমালোচকদের দাবি অনুযায়ী, ঈসা মসীহ্‌র প্রথম সাহাবীরা যেমন মথি, ইউহোন্না, পিতর এবং ইয়াকুব ঈসা মসীহ্‌র মূল ইঞ্জিল লুকিয়ে রেখে নিজেদের জাল কিতাব প্রচার করতেন। তাদের বাণী প্রচারের জন্য এই ১২জন সাহাবী কোন লাভ পান নি বরং শুধু অত্যাচার এবং কষ্ট; অর্থাৎ আখিরাতের আসল বাণী লুকিয়ে রাখার জন্য তাদের কোন দুনিয়াবী লাভ ছিল না। এরিস্টটল, ভার্জিল, এবং কনফুসিয়াস ইত্যাদি বিধর্মী নৈতিক নেতা্দের মূল বাণী শতাব্দীর পর শতাবদী তাদের শিষ্যদের মধ্যে বিশ্বস্তভাবে থেকে গেলেন, কিন্তু এই মতবাদ অনুযায়ী ঈসা মসীহ্‌ তার সাহাবীদের মধ্যে অত্যন্ত কম সততা প্রদান করলেন। এটা কি বিশ্বাস করা সম্ভব?

সমস্যা #২: তাদের কথায় আল্লাহ্‌কে অপমান করা হয়

কিন্তু অবশেষে, নায়েক ও দিদাত ঈসার জীবনী যেভাবে অঙ্কিত করে, আল্লাহ্‌ কোন ক্ষমতাশালী ইলাহ্‌ নয় বরং বিভ্রান্ত ও নিষ্ফলতার একজন দুর্বল আল্লাহ্‌। আমরা বিশ্বাস করি যে আল্লাহ্‌ সর্বশক্তিমান, তিনি তাঁর বাণী রক্ষা করতে সক্ষম (যেমন কোরআন শরীফ বলেন, “তার কালাম পরিবর্তন করতে কেহ নেই”), এবং তিনি একজন মাবুদ যার নবীগণ সত্যের একটি স্থায়ী অবদান রাখেন। ইতিহাসের জন্য তাঁর পরিকল্পনার ক্রমাগত প্রকাশে তিনি কোন ভুল করেন না।

কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমরা শুনতে চাই! নিচের ফর্ম দিয়ে যোগাযোগ করুন:

Enable javascript in your browser if this form does not load.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *