ইম্মানুয়েল ভবিষ্যদ্বাণী কি মিথ্যা?
প্রশ্ন:
জাতির কাছে এক কঠিন প্রশ্ন: বাইবেলের এই ভবিষ্যত বাণী কি মিথ্যা নয়? লজিকালি উত্তর দিবেন।
বাইবেলে ভবিষ্যত বাণী করা হয়েছিল যে, মরিয়মের ছেলের নাম রাখা হবে ইম্মানুয়েল। ইম্মানুয়েল অর্থ ” ঈশ্বর আমাদের সাথে”। আর যিশু অর্থ “অভিষিক্ত ত্রানকর্তা”। গস্পেল অফ মথি ১/২২,২৩ এ বলা হয়েছে,
“একজন অবিবাহিতা সতী মেয়ে গর্ভবতী হবে, আর তার একটি ছেলে হবে, তার নাম রাখা হবে ইম্মানুয়েল।”(মথি ১:২২,২৩)
বাইবেলে স্পষ্ট বলা হয়েছে তার নাম হবে ইম্মানুয়েল, যার অর্থ “ঈশ্বর আমাদের সাথে”। তাহলে মরিয়মের পুত্রের এমন এক নাম রাখা হবে যার নামের অর্থ হবে “ঈশ্বর আমাদের সাথে।” মরিয়মের পুত্রের নাম কি তাই রাখা হয়েছে যার অর্থ “ঈশ্বর আমাদের সাথে?” যদি তাই রাখা না হয় তাহলে তো এটা স্পষ্ট যে, বাইবেলের ভবিষ্যত বাণী মিথ্যা। বাইবেলের এই ভবিষ্যত বাণী মিথ্যা কারণ মরিয়মের পুত্রের নাম কেউ ইম্মানুয়েল রাখেনি। মরিয়মের পুত্রের নাম রাখা হয়েছিল, “যিশু”, যার অর্থ হচ্ছে: অভিষিক্ত ত্রানকর্তা। তাহলে ইম্মানুয়েল নামের অর্থ এবং যিশু নামের অর্থ ভিন্ন। তারমানে এটা সুস্পষ্ট যে, বাইবেলের এই ভবিষ্যত বাণীটা পরবর্তীতে মিথ্যা প্রমাণিত হয়েছে অর্থাৎ মরিয়মের ছেলের নাম কেউ ইম্মানুয়েল রাখেনি অথবা তার সমার্থক অর্থবোধক কোনো নামও রাখেনি। তাহলে বাইবেলের এই ভবিষ্যত বাণী কি মিথ্যা নয়?
উত্তর:
বই ব্যাখ্যার নিয়ম হলো যে সেই বইয়ের ভাষা ও সংস্কৃতি অনুযায়ী সেটাকে ব্যাখ্যা করতে হয়। হিব্রু ভাষায় একজনের “নাম” মানে তার বৈশিষ্ট্য। ইশাইয়া কিতাবে ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছে যে “তার নাম রাখা হবে ইম্মানুয়েল” (৭:১৪); কিন্তু একটু পরে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে:
“একটি ছেলে আমাদের জন্য জন্মগ্রহণ করবেন, একটি পুত্র আমাদের দেওয়া হবে। শাসন করবার ভার তাঁর কাঁধের উপর থাকবে, আর তাঁর নাম হবে আশ্চর্য পরামর্শদাতা, শক্তিশালী আল্লাহ্, চিরস্থায়ী পিতা, শান্তির বাদশাহ্।” (ইশাইয়া ৯:৬)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে ইশাইয়া নবীর ব্যবহারে “নাম” মানে জন্ম নিবন্ধনের লেখায় নাম নয়, বরং বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি বোঝায়, বা মানুষ তাঁকে কী বলে ডাকে। লোকদের মধ্যে তাঁকে কি কি বলা হয়, সেটাই তার নাম।
এখন “তার নাম ইম্মানুয়েল রাখা হবে” এই ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হিসেবে প্রমাণ করার জন্য এটা প্রমাণ করতে হবে যে, কেউ কখনো ঈসাকে “আমাদের সঙ্গে আল্লাহ” বলেন নি, এবং সেটা তো সম্ভব না। ইঞ্জিলে বার বার বলা হয়েছে যে মানুষ সেইভাবে ঈসাকে বুঝেছে যে তিনি “আমাদের সঙ্গে আল্লাহ”। মা মরিয়ম সেই সাহাবাদের একজন বলে আমরা ধরে নিতে পারি যে তিনিও ঈসাকে সেইভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
একটা উদাহরণ দেইঃ হিন্দুধর্মে নরশাংসার ভবিষ্যত বাণী করা হয়েছে যার অর্থ প্রসংশিত। অপরদিকে মুহাম্মাদ অর্থও প্রসংশিত। নামের অর্থগত হুবহু মিল থাকা সত্ত্বেও অনেক হিন্দুরা মুহাম্মাদ সাঃ কে নরশাংসা বলে বিশ্বাস করেনা। তাহলে নামের অর্থগত সম্পূর্ণ ভিন্ন অর্থ হবার পরেও খ্রিস্টানরা বাইবেলের এই ভবিষ্যত বাণীকে কিভাবে সত্য বলে বিশ্বাস করে? খ্রিস্টানরা কি সত্য পথে আসবেনা? খ্রিস্টান পন্ডিত গ্যারি ডেভানি বলেন,
“আর খ্রিস্টের নাম ইম্মানুয়েল না হয়ে যিশু কেন হল? যিশুকে বুঝাতে কেউ কি ইম্মানুয়েল বলেন? আপনি কি যিশুকে বুঝাতে তাকে ইম্মানুয়েল বলে আখ্যায়িত করেন? যিশাইয় কি বলেননি যে, তার নাম হবে ইম্মানুয়েল? ইম্মানুয়েল অর্থ ঈশ্বর আমাদের সাথে। যিশু খ্রিস্ট অর্থ অভিষিক্ত ত্রানকর্তা।…. যিশাইয় ৭:১৪ ভবিষ্যতবাণী কি মিথ্যা প্রমাণিত হলনা?।” (গ্যারি ডেভানি )
তাহলে বাইবেলের এই ভবিষ্যত বাণী মিথ্যা।
এই ‘খ্রিস্টান পন্ডিত গ্যারি ডেভানি’ কোনো খ্রিষ্টানও না, কোনো পন্ডিতও না।
বই ব্যাখ্যার নিয়ম হলো যে সেই বইয়ের ভাষা ও সংস্কৃতি অনুযায়ী সেটাকে ব্যাখ্যা করতে হয়। হিব্রু ভাষায় একজনের “নাম” মানে তার বৈশিষ্ট্য। ইশাইয়া কিতাবে ভবিষ্যদ্বাণী হয়েছে যে “তার নাম রাখা হবে ইম্মানুয়েল” (৭:১৪); কিন্তু একটু পরে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে যে:
“একটি ছেলে আমাদের জন্য জন্মগ্রহণ করবেন, একটি পুত্র আমাদের দেওয়া হবে। শাসন করবার ভার তাঁর কাঁধের উপর থাকবে, আর তাঁর নাম হবে আশ্চর্য পরামর্শদাতা, শক্তিশালী আল্লাহ্, চিরস্থায়ী পিতা, শান্তির বাদশাহ্।” (ইশাইয়া ৯:৬)
এই আয়াত থেকে বোঝা যায় যে ইশাইয়া নবীর ব্যবহারে “নাম” মানে জন্ম নিবন্ধনের লেখায় নাম নয়, বরং বৈশিষ্ট্য বা গুণাবলি বোঝায়, বা মানুষ তাঁকে কী বলে ডাকে। লোকদের মধ্যে তাঁকে কি কি বলা হয়, সেটাই তার নাম।
এখন “তার নাম ইম্মানুয়েল রাখা হবে” এই ভবিষ্যদ্বাণী ভুল হিসেবে প্রমাণ করার জন্য এটা প্রমাণ করতে হবে যে, কেউ কখনো ঈসাকে “আমাদের সঙ্গে আল্লাহ” বলেন নি, এবং সেটা তো সম্ভব না। ইঞ্জিলে বার বার বলা হয়েছে যে মানুষ সেইভাবে ঈসাকে বুঝেছে যে তিনি “আমাদের সঙ্গে আল্লাহ”। মা মরিয়ম সেই সাহাবাদের একজন বলে আমরা ধরে নিতে পারি যে তিনিও ঈসাকে সেইভাবে ব্যাখ্যা করেছেন।
ইঞ্জিলে বার বার বলা হয়েছে যে মানুষ সেইভাবে ঈসাকে বুঝেছে যে তিনি “আমাদের সঙ্গে আল্লাহ”। মা মরিয়ম সেই সাহাবাদের একজন বলে আমরা ধরে নিতে পারি যে তিনিও ঈসাকে সেইভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। এইটুকু বুঝতে পারলাম না ব্যাখ্যা করুন
আমি অনেকগুলো আয়াত দিতে পারতাম, কিন্তু সেগুলো দিলে পুরো আলোচনা ভিন্ন দিকে চলে যাবে এবং মূল প্রশ্ন থেকে সরে যাবে। এখানে আলোচ্য বিষয় ঈসার পরিচয় নয় বরং “ইম্মানুয়েল” মিথ্যা ভবিষ্যদ্বাণী কিনা। তবুও আপনাকে কয়েকটি আয়াত দিই এখানে:
“অ-ঈমানদার লোকদের মন এই যুগের দেবতা অন্ধ করে দিয়েছে যেন তারা সুসংবাদের নূর দেখতে না পায়। এই সুসংবাদে মসীহের মহিমা ফুটে উঠেছে, আর এই মসীহ্ই হলেন আল্লাহ্র হুবহু প্রকাশ।”(২ করিন্থীয় ৪:৪)
“এই পুত্রই হলেন অদৃশ্য আল্লাহ্র হুবহু প্রকাশ। সমস্ত সৃষ্টির আগে তিনিই ছিলেন এবং সমস্ত সৃষ্টির উপরে তিনিই প্রধান,”(কলসীয় ১:১৫)
“আসলে তিনি আল্লাহ্ রইলেন, কিন্তু আল্লাহ্র সমান থাকা তিনি আঁকড়ে ধরে রাখবার মত এমন কিছু মনে করেন নি।”(ফিলিপীয় ২:৬)
“প্রথমেই কালাম ছিলেন, কালাম আল্লাহ্র সংগে ছিলেন এবং কালাম নিজেই আল্লাহ্ ছিলেন।”(ইউহোন্না ১:১)
আপনি লিখেছেন:
এই ‘খ্রিস্টান পন্ডিত গ্যারি ডেভানি’ কোনো খ্রিষ্টানও না, কোনো পন্ডিতও না।
গ্যারি ডেবানি কে তাহলে?
গ্যারি ডেবানি একজন নাস্তিক, তার ওয়েবসাইট থেকে স্পষ্টই বোঝা যায়:
“…there is still no evidence of any supernatural God. It is still all pretend, myth and manipulation … Religion is pure nonsense.” ( Gary Delaney, ‘Atheism’)
কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমরা শুনতে চাই! নিচের ফর্ম দিয়ে যোগাযোগ করুন:
Leave a Reply