বাইবেলে খ্রিস্টানদের ঈশ্বর কাঁদে??
বাইবেলে খ্রিস্টানদের ঈশ্বর কাঁদে??
১৩ “প্রভু বলবান সৈন্যের মত চলে যাবেন! তিনি হবেন যুদ্ধ করতে প্রস্তুত মানুষের মত। তিনি প্রচণ্ড উত্তেজিত হয়ে উঠবেন। তিনি কাঁদবেন, উচ্চস্বরে চিত্কার করবেন এবং তার শত্রুদের পরাজিত করবেন।
১৪ দীর্ঘদিন ধরে আমি কিছুই বলিনি। আমি নিজেকে সংযত করে রেখেছিলাম, বলিনি কোন কিছুই। কিন্তু এখন আমি প্রসব করতে যাচ্ছে এমন এক মহিলার মতো চিত্কার করে কাঁদব। আমি জোরে জোরে সশব্দে প্রশ্বাস নেব” (ইশাইয়া ৪২:১৩-১৪)
কোরআন ও বাইবেলে আল্লাহর বিভিন্ন আবেগের কথা বলা হয় – রাগ (مَغضُوب সূরা ফাতিহা ১:৭), প্রেম (وَدُودُ সূরা আল বুরূজ ৮৫:১৪), এবং সহানুভূতি (رحمة), তাই আল্লাহ্র দুঃখ থাকা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু এখানে বলা হচ্ছে না যে আল্লাহ্ কাঁদে। প্রথম আয়াতে আল্লাহর কথা বলা হচ্ছে বটে, কিন্তু এখানে “কাঁদা” বলা হচ্ছে না। সমালোচক একটি অপ্রচলিত অনির্ভরযোগ্য অনুবাদ ব্যবহার করেছে; আমি এখানে মূল ভাষা ও ইংরেজি সহ দুটি প্রচলিত ও নির্ভরযোগ্য অনুবাদ দিচ্ছি ১৩ আয়াত:
১৩ “יְהוָה֙ כַּגִּבֹּ֣ור יֵצֵ֔א כְּאִ֥ישׁ מִלְחָמֹ֖ות יָעִ֣יר קִנְאָ֑ה יָרִ֙יעַ֙ אַף־יַצְרִ֔יחַ”(ইশাইয়া ৪২:১৩, মূল হিব্রু)
১৩ “The LORD will march out like a champion,
like a warrior he will stir up his zeal;
with a shout he will raise the battle cry and will triumph over his enemies.” (ইশাইয়া ৪২:১৩, NIV অনুবাদ)১৩ “একজন শক্তিশালী লোকের মত করে মাবুদ বের হয়ে আসবেন;
তিনি যোদ্ধার মত তাঁর আগ্রহকে উত্তেজিত করবেন;
তিনি চিত্কার করে যুদ্ধের হাঁক দেবেন আর শত্রুদের উপর জয়ী হবেন।” (ইশাইয়া ৪২:১৩, কিতাবুল মোকাদ্দস অনুবাদ)১৩ “সদাপ্রভু বীরের ন্যায় যাত্রা করিবেন,
যোদ্ধার ন্যায় উদ্যোগ উত্তেজিত করিবেন;
তিনি জয়ধ্বনি করিবেন, হাঁ, মহানাদ করিবেন; তিনি শত্রুদের বিপরীতে পরাক্রম দেখাইবেন” (যিশাইয় ৪২:১৩, কেরী অনুবাদ)
এই অপ্রচলিত অনুবাদের অনুবাদক সম্ভবত ইংরেজির ‘battle cry’ (יָרִ֙יעַ֙) ভুল বুঝেছে – সেটার অর্থ ‘কাঁদা’ নয় বরং ‘চিৎকার করা’। কিতাবুল মোকাদ্দস ও কেরী অনুবাদ কিন্তু সরাসরি হিব্রু ভাষা থেকে অনূদিত, এইজন্য সঠিক ভাবে অনুবাদ করা হয়েছে।
এখন ১৪ আয়াতে দেখি:
১৪ “הֶחֱשֵׁ֙יתִי֙ מֵֽעֹולָ֔ם אַחֲרִ֖ישׁ אֶתְאַפָּ֑ק כַּיֹּולֵדָ֣ה אֶפְעֶ֔ה אֶשֹּׁ֥ם וְאֶשְׁאַ֖ף יָֽחַד׃”(ইশাইয়া ৪২:১৪, মূল হিব্রু)
১৪ “For a long time I have kept silent, I have been quiet and held myself back. But now, like a woman in childbirth, I cry out, I gasp and pant.” (ইশাইয়া ৪২:১৪, NIV অনুবাদ)
১৪ “আমি মাবুদ অনেক দিন চুপ করে ছিলাম; আমি শান্ত থেকে নিজেকে দমন করে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন প্রসবকারিণী স্ত্রীলোকের মত আমি চিত্কার করছি, শ্বাস টানছি ও হাঁপাচ্ছি।” (ইশাইয়া ৪২:১৪, MBCL কিতাবুল মোকাদ্দস অনুবাদ)
১৪ আমি অনেক দিন চুপ করিয়া আছি, নীরব আছি, ক্ষান্ত রহিয়াছি; এখন প্রসবকারিণী স্ত্রীর ন্যায় কোঁকাইয়া উঠিব; আমি এককালে নিশ্বাস টানিয়া ফুৎকার করিব।” (যিশাইয় ৪২:১৪, কেরী অনুবাদ)
১৪ আয়াতেও কিন্তু আল্লাহর ‘কাঁদা’র কথা বলা হয় নি, অর্থাৎ দুঃখের কান্না। এখানে মূল হিব্রু ভাষায় נשׁם নাশম শব্দের অর্থ ‘চিৎকার’, অর্থাৎ প্রসবকারিণী স্ত্রীর মত জোরে চিৎকার করার কথা বলা হচ্ছে – আল্লাহ্ তার গজব প্রকাশ করবে। এখানে কাব্যিক ভাষায় পাপীদের বিরুদ্ধে আল্লাহর গজবের প্রকাশের কথা বুঝানো হচ্ছে।
কোনো প্রশ্ন বা মন্তব্য থাকলে আমরা শুনতে চাই! নিচের ফর্ম দিয়ে যোগাযোগ করুন:
Leave a Reply