২ খান্দাননামা ২:২—“৩,৬০০ নাকি মাত্র ৩,৩০০ জন?”

২ খান্দাননামা ২:২—“এখানে বলা হয়েছে যে সোলায়মান ৩,৬০০ লোককে বাইতুল মোকাদ্দস তৈরির তদারক করার কাজে লাগালেন, কিন্তু ১ বাদশাহ্‌নামা ৫:১৬ অনুযায়ী মাত্র ৩,৩০০ জন।”

এটা বড় কোন সমস্যা না। সম্ভবত ৩,৩০০ জন প্রতিদিন কাজ করতেন, কিন্তু মোট ৩,৬০০ তদারক প্রস্তুত ছিল, অর্থাৎ ৩০০ জন অতিরিক্ত ছিল যদি কেউ অসুস্থ হয় বা মারা যায়। এত বড় একটি দলের ক্ষেত্রে অবশ্য অসুস্থতার জন্য হিসাব করতে হবে। কোরআন শরীফেও এই ধরণের সাংখ্যিক সমস্যা রয়েছে—সূরা আলে-‘ইমরান অনুযায়ী একাধিক ফেরেশতা মরিয়মের কাছে আসলেন, কিন্তু সূরা মরিয়ম ১৯:১৭-২১ অনুযায়ী একজন ফেরেশতা আসলেন। সূরা কামার ৫৪:১৯ অনুযায়ী আল্লাহ্‌ এক দিনে আদ জাতি ধ্বংস করলেন, কিন্তু সুরা হাক্কা ৬৯:৬-৭ অনুযায়ী দীর্ঘ ৮ দিনে হয়েছে। অর্থাৎ উভয় কিতাবে এই ধরণের জটিলতা রয়েছে।

১ বাদশাহ্‌নামা ১৫:৩৩ – বাদশাহ্‌ বাশা কোন সালে মারা গিয়েছিলেন?

১ বাদশাহ্‌নামা ১৫:৩৩—“এখানে বলা হয়েছে যে বাদশাহ্‌ আসার রাজত্বের ষড়বিংশ বছরে বাশা মারা গেলেন, কিন্তু ২ খান্দাননামা ১৬:১ অনুযায়ী তিনি ৩৬শ বছরে তিনি জীবিত ছিলেন।”

এখানে “রাজত্ব” এর মূল হিব্রু শব্দ হল מלכות “মাল্‌কুত”, যার অর্থ “রাজ্য”, শুধু “রাজত্বকাল” নয়। যদি আমরা এই অর্থে ব্যাখ্যা করি, তাহলে এখানে বাদশাহ আসার ব্যক্তিগত রাজত্বকাল বোঝানো হচ্ছে না বরং তার রাজ্যের শুরু থেকে, অর্থাৎ ইসরাইলীয় এবং ইহুদী রাজ্য যখন দু’ভাগ হয়ে গেল সেই সময় থেকে (৯৩০খ্রীষ্টপূর্ব)। এইভাবে হিসাব করলে ১ বাদশাহ্‌নামার সঙ্গে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে মিলে যায়। অন্য কেউ কেউ মনে করেন এখানে একটি লিপিকরের ভুল দেখা যাচ্ছে, কারণ পুরাতন হিব্রু বর্ণমালায় ‘৩’ এবং ‘১’ নেক কাছাকাছি।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

 

  1. ১.

১ বাদশাহ্‌নামা ৭:২৩ – পাত্রের মাপ কত?

১ বাদশাহ্‌নামা ৭:২৩—“পাত্রের এক দিকে থেকে সোজাসুজি অন্য দিকের মাপ দশ হাত হলে বেড়ের চারপাশের মাপ হবে ত্রিশ হাত নয় বরং ৩১.৪ হাত”

২৬ আয়াত অনুযায়ী পাত্রের বেড়টা ছিল চার আংগুল পুরু এবং বাইরের দিকে লিলি ফুলের পাপড়ির মত উল্টানো ছিল:

 

Bath Shape
তাই বেড়ের মাপটা নির্ভর করে কোন্‌ জায়গায় মাপানো হচ্ছে। বেড়ের ভিতরে না বাইরে না নিচে—এক এক জায়গার মাপ এক এক রকম হবে।

কোরআনের সূরা নিসা ৪:১১-২ এবং ১৭৬ আয়াতের উত্তরাধিকার নিয়মের মধ্যে একই রকমের সংখ্যার জটিলতা পাওয়া যায়। যখন একজন মানুষ মারা গিয়ে তিনটি মেয়ে, তার বাবা-মা এবং স্ত্রী রেখে যায়, সম্পত্তির ২/৩ ভাগ পাবে তাঁর মেয়েরা, ১/৩ ভাগ পাবে তাঁর বাবা-মা (১১ আয়াত অনুযায়ী), এবং ১/৮ ভাগ পাবে তাঁর স্ত্রী (১২ আয়াত অনুযায়ী); যোগ করলে সেই ব্যক্তির সম্পত্তির বেশী হয়ে যায়। দ্বিতীয় উদাহরণ— একজন তার মা, স্ত্রী এবং দুই বোন রেখে মারা গেলে, তাঁর মা পাবে সম্পত্তির ১/৩ ভাগ (১১ আয়াত), স্ত্রী পাবে ১/৪ ভাগ (১২ আয়াত), এবং দুই বোন পাবে ২/৩ ভাগ (১৭৬ আয়াত), আবার সেটা হয় সম্পত্তির ১৫/১২ ভাগ। মূল কথা, কিতাবুল মোকাদ্দস এবং কোরআন উভয় গ্রন্থে আপাত দৃষ্টিতে এই রকম সাংখ্যিক জটিলতা আছে, কিন্তু একটু গভীরে গেলে অনেক ক্ষেত্রে সমাধান পাওয়া যায়।

১ বাদশাহ্‌নামা ৪:২৬ – চল্লিশ হাজার নাকি চার হাজার ঘর?

১ বাদশাহ্‌নামা ৪:২৬—“বাদশাহ্‌ সোলায়মানের রথের ঘোড়াগুলোর জন্য কতটা ঘর ছিল— চল্লিশ হাজার (১ বাদশাহ্‌নামা ৪:২৬) নাকি চার হাজার (২ খান্দাননামা ৯:২৫)?”

আসলে উভয় জায়গায় মূলে লেখা ছিল চার হাজার যেমন করে সেপ্টুয়াজিন্ট ও অন্যান্য পাণ্ডুলিপিতে আছে। প্রাচীন লিপিকরের একটি ভ্রমের কারণে অন্যান্য কিছু পাণ্ডুলিপিতে চল্লিশ হাজার লেখা আছে। হিব্রু ভাষায়, চল্লিশ (אַרְבָּעִים) এবং চার (אַרְבַּעַת) দেখতে প্রায় একই, এবং সম্ভবত পান্ডুলিপিতে সেই সংখ্যা অস্পষ্ট ছিল।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

২ শামুয়েল ২৪:১৩ – সাত বছর দুর্ভিক্ষ নাকি মাত্র তিন বছর?

২ শামুয়েল ২৪:১৩—“এখানে বলা হয়েছে যে সাত বছর দুর্ভিক্ষ হবে, কিন্তু ১ খান্দাননামা ২১:১২ আয়াতে মাত্র তিন বছরের কথা বলা হয়েছে।”

কিছু কিছু প্রাচীন পান্ডুলিপিতে শামুয়েলে “তিন” আছে, অন্য পান্ডুলিপিতে “সাত” আছে। অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেন যেহেতু প্রাচীন হিব্রু আব্জাদ সংখ্যায় ‘সাত’ (ז) এবং ‘তিন’ (ג) এর মধ্যে অনেক মিল আছে, সেহেতু লিপিকর ভুল করে ‘তিন’ এর বদলে ‘সাত’ লিখেছিলেন (কোরআন এবং কিতাবুল মোকাদ্দসে এই ধরনের ভিন্নপাঠের বিষয় আরও বিস্তারিত আলোচনার জন্য নিচের লিংক দেখুন)। ‘তিন’ সঠিক হলে, অবশ্যই কোন অমিল নেই।

‘সাত’ সঠিক হলে, আমরা সহজে অনুমান করতে পারি যে ১ খান্দাননামাতে শুধু দুর্ভিক্ষের সবচেয়ে তীব্র বছরের কথা বলা হয়েছে, কিন্তু ২ শামুয়েলে সেই তিনটি কঠিন বছরের আগে ও পরের দুটো বছরের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে, যখন দুর্ভিক্ষটা শুরু হচ্ছিল এবং কমিয়ে যাচ্ছিল। কোরআন শরীফের ক্ষেত্রেও আমরা একই ধরনের জটিলতা দেখি— সূরা ক্বার ৫৪:১৯ অনুযায়ী আল্লাহ্‌ আদ সম্প্রদায়কে এক দিনে ধ্বংস করেছিলেন, কিন্তু সূরা হাক্কা ৬৯:৬-৭ আয়াত অনুযায়ী দীর্ঘ আট দিন লেগেছে। আমরা অনুমান করতে পারি যে আট দিনে তাদের ধ্বংস হয়েছিল কিন্তু বিশেষ করে এক দিনে সবচেয়ে কঠিন ধ্বংস চলচ্ছিল।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

 

২ শামুয়েল ২৪:৯ – ৫ নাকি ৪.৭ লক্ষ সৈন্য ?

২ শামুয়েল ২৪:৯—(দ্বিতীয় প্রশ্ন) “এখানে বলা হয়েছে এহুদার ৫ লক্ষ সৈন্য ছিল, কিন্তু ১ খান্দাননামা ২১:৫ আয়াতে ৪.৭ লক্ষ সৈন্য ছিল।”

১ খান্দাননামা ২১:৬ আয়াতে পরিষ্কার ভাবে বলা হয়েছে যে যোয়াব তার গণনা শেষ করতে পারেনি কারণ তিনি বিনয়ামীন এবং লেবীয় গোষ্ঠী গণনা করেননি। তাই কিছু কিছু সংখ্যাতে বিভিন্ন দল বা ঘোষ্ঠী বাদ দেওয়া হল অথবা যোগ দেওয়া হল। অন্য একটি আয়াতে (১ খান্দাননামা ২৭:২৩-২৪) বলা হয়েছে যে দাউদ বিশ বছরের কম বয়সে কোন ছেলের হিসাব করেননি, এবং যে যোয়াবের গণনা অসমাপ্ত বলে বাদশাহ্‌ দাউদের ইতিহাস বইয়ে কোন সংখ্যা দেওয়া হয়নি।

কোরআনের সূরা নিসা ৪:১১-২ এবং ১৭৬ আয়াতের উত্তরাধিকার নিয়মের মধ্যে একই রকমের সংখ্যার জটিলতা পাওয়া যায়। যখন একজন মানুষ মারা গিয়ে তিনটি মেয়ে, তার বাবা-মা এবং স্ত্রী রেখে যায়, সম্পত্তির ২/৩ ভাগ পাবে তাঁর মেয়েরা, ১/৩ ভাগ পাবে তাঁর বাবা-মা (১১ আয়াত অনুযায়ী), এবং ১/৮ ভাগ পাবে তাঁর স্ত্রী (১২ আয়াত অনুযায়ী); যোগ করলে সেই ব্যক্তির সম্পত্তির বেশী হয়ে যায়। দ্বিতীয় উদাহরণ— একজন তার মা, স্ত্রী এবং দুই বোন রেখে মারা গেলে, তাঁর মা পাবে সম্পত্তির ১/৩ ভাগ (১১ আয়াত), স্ত্রী পাবে ১/৪ ভাগ (১২ আয়াত), এবং দুই বোন পাবে ২/৩ ভাগ (১৭৬ আয়াত), আবার সেটা হয় সম্পত্তির ১৫/১২ ভাগ। মূল কথা, কিতাবুল মোকাদ্দস এবং কোরআন উভয় গ্রন্থে আপাত দৃষ্টিতে এই রকম সাংখ্যিক জটিলতা আছে, কিন্তু একটু গভীরে গেলে অনেক ক্ষেত্রে সমাধান পাওয়া যায়।

২ শামুয়েল ২৪:১ – আল্লাহ্‌ নাকি শয়তান?

২ শামুয়েল ২৪:১—“একটি আদমশুমারী করতে কে হযরত দাউদকে উত্তেজিত করে তুলেছেন?”

দুটাই ঠিক—আল্লাহ্‌র অনুমতিতে শয়তান দাউদকে উত্তেজিত করে তুলেছিলেন। একটি খুনের ক্ষেত্রে যেমন বলা যায় বন্দুকের গুলিও হত্যা করেছে, আবার হত্যাকারীও হত্যা করেছে, তেমনই এই ক্ষেত্রে বলা যায় শয়তানও দাউদকে করিয়েছে, আবার আল্লাহ্‌ দাউদকে করিয়েছে।

এই ক্ষেত্রে মাবুদ দেখেছিলেন যে হযরত দাউদ শক্তিশালী বাদশাহ্‌ হয়ে অতিরিক্ত গর্বিত হয়ে গিয়েছিল, এবং আল্লাহ্‌র উপর নির্ভর না করে তিনি তার বাহিনীর উপরে বিশ্বাস রাখছিল। শয়তান ভাবছিলেন যে এই অবস্থা একটি আদমশুমারী করার জন্য দাউদকে উত্তেজিত করে তুললে, দাউদের সর্বনাশ হবে। কিন্তু আল্লাহ্‌র সর্বজ্ঞ ক্ষমতায় তিনি জানতেন যে এর মাধ্যমে দাউদ তওবা করে আল্লাহ্‌র কাছে আবার ফিরে আসবেন, অর্থাৎ সর্বশেষে এই আদমশুমারীর মাধ্যমে দাউদের মঙ্গল হবে। সেইজন্য দাউদকে প্রভাবিত করার জন্য আল্লাহ্‌ শয়তানকে অনুমতি দিয়েছিলেন। হযরত আইয়ুবের ক্ষেত্রেও একই জিনিস দেখা যায়; শয়তান ভাবছিলেন যে আইয়ুবের ক্ষতি করলে অবশ্যই আইয়ুব আল্লাহ্‌কে অভিশাপ করবে, তখন আইয়ুবকে আঘাত করার জন্য আল্লাহ্‌ শয়তানকে অনুমতি দিয়েছেন কারণ আল্লাহ্‌ জানতেন হযরত আইয়ুবের বিশ্বস্ততা টিকে থাকবে। উভয় ক্ষেত্রে, শয়তানের পরিকল্পনা ছিল সীমিত, কিন্তু আল্লাহ্‌ শয়তানের সীমিত পরিকল্পনা তার নিজের মহা বিজয়ের জন্য ব্যবহার করেছিলেন। শয়তান যেমন ছলনা করত তেমনি, আল্লাহও ছলনা করতেন। বস্তুতঃ আল্লাহর ছলনা সবচেয়ে উত্তম।” (সূরা আল আনফাল ৮:৩০)

কোরআন শরীফে আমরা একই ধরণের জটিলতা পাই। কিছু কিছু আয়াতে বলা হয়েছে যে পৌত্তলিকরা যে ফেরেশতাদের সেজদা করত (৩:৮০) সেই ফেরেশতাদের কারো প্রাণ নেওয়ার ক্ষমতা নাই (ফুরকান ২৫:৩), আবার অন্যান্য কিছু আয়াতে বলা হয়েছে যে মানুষদের প্রাণ হরণ করার ক্ষমতা ফেরেশতাদের ছিল (আন-নিসা ৪:৯৭, ১৬:২৮)। এই ক্ষেত্রেও অবশ্যই আল্লাহ্‌ তার হাতিয়ার হিসেবে সেই ফেরেশতাদের ব্যবহার করেছেন।

২ শামুয়েল ২৩:৮ – ৮০০ নাকি ৩০০?

২ শামুয়েল ২৩:৮—“নবী দাউদের শক্তিশালী লোকদের প্রধান যুদ্ধে ৮০০ লোককে হত্যা করেছিলেন, নাকি মাত্র ৩০০ জনকে হত্যা করেছিলেন (১ খান্দাননামা ১১:১১)?”

হয়ত একই ব্যক্তির দুটি আলাদা ঘটনার কথা বলা হচ্ছে এখানে, না হয় হয়ত একটি বর্ণনায় আংশিক সংখ্যা দেওয়া হয়েছে এবং একটিতে পূর্ণ সংখ্যা দেওয়া হয়েছে (৮০০জন হত্যা হলে অবশ্য ৩০০জনের হত্যা করা হয়েছিল!)।…

১,৭০০ ঘোড়সওয়ার নাকি ৭,০০০?

২ শামুয়েল ৮:৪—“হযরত দাউদ সোবার রাজার ১,৭০০ ঘোড়সওয়ার আটক করলেন নাকি ৭,০০০ (১ খান্দাননামা ১৮:৪)?”

আসলে ২ শামুয়েল ৮:৪ এর মূল লেখায় খান্দাননামার মত ছিল ৭,০০০ (“এক হাজাত রথ সাত হাজার ঘোড়সওয়ার”)। প্রাচীন একটি পান্ডুলিপিতে যখন “রথ” (רֶכֶב) শব্দটা ভুল করে বাদ দেওয়া হল, তখন সেটা হয়ে গেল “এক হাজার সাত হাজার ঘোড়সওয়ার” যার ফলে পরের লিপিকর এটা ঠিক করলেন “এক হাজার সাত শত ঘোড়সওয়ার”।

তবুও এটাও উল্লখযোগ্য যে সবচেয়ে প্রাচীন পাণ্ডুলিপির মধ্যে কিছু কিছু পাণ্ডুলিপিতে আসল মূল সংখ্যা (৭,০০০) রয়েছে ১ শামুয়েলে। অর্থাৎ, লিপিকরদের এই ভুল সব পাণ্ডুলিপিতে আসেনি।


অন্যান্য সম্পর্কিত প্রবন্ধ:

সিন্দুকটা কবে সরিয়েছে?

২ শামুয়েল ৫,৬—“নবী দাউদ কোন্‌ সময়ে সাক্ষ্য-সিন্দুকটা জেরুজালেমে এনেছিলেন; ফিলিস্তিনীয়দের পরাজিত করার পরে (২ শামুয়েল ৫,৬ অধ্যায়) না আগে (১ খান্দাননামা ১৩,১৪ অধ্যায়)?”

এখানে আসলে কোন সমস্যা নেই, কারণ ১ খান্দাননামা ১৫ পর্যন্ত পড়লে জানা যায় যে নবী দাউদ (আঃ) ফিলিস্তিনীয়দের পরাজিত করার পরে সাক্ষ্য-সিন্দুকটি নিয়ে আনলেন। কারণটা হল, বনি-ইসরাইলীয়রা দুই বার সাক্ষ্য-সিন্দুকটি সরিয়ে দিলেন। প্রথমবারে ফিলিস্তিনীয়দের পরাজিত করার আগে এরা বালি-এহুদা থেকে সিন্দুকটা বের করে আনল, যেমন ২ শামুয়েল ৫ ও ৬ অধ্যায়ে ও ১ খান্দাননামা ১৫ অধ্যায়ে বলা হয়। যখন নবী শামুয়েল দাউদের বিজয়ের বর্ণনা শেষ করেন, তখন তিনি প্রথম ও দ্বিতীয় সফরের কথা একসঙ্গে বলেন। কিন্তু ১ খান্দাননামাতে, ঘটনাগুলোর ক্রম এই রকম হয়— প্রথম সিন্দুকটা বালি-এহুদা থেকে বের করে আনা হয়, তারপর দাউদ ফিলিস্তিনীয়দের পরাজিত করেন, এবং তারপর সিন্দুকটা ওবেদ-ইদোমের বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হয়।

তাই এই দুই বর্ণনা পরস্পর-বিরোধী নয়, বরং প্রথম বর্ণনায় সিন্দুকের দুই যাত্রা একসঙ্গে বলা হয়, এবং দ্বিতীয় বর্ণনায় অন্যভাবে ইতিহাসটা বলা হয়েছে। উভয় বর্ণনায় ঘটনার ক্রম একই।

কোরআন শরীফেও এমন ঘটনার ক্রমের জটিলতা রয়েছে—সূরা বাকারাতে প্রথমে হযরত আদম (আঃ)-এর পতনের কথা বলা হয়, তারপর ইসরাইলের প্রতি আল্লাহ্‌র রহমতের কথা বলা হয়, তারপর ফেরাউনের ডুবে যাওয়ার ঘটনা, তারপর হযরত মূসা এবং সোনার বাছুরের মূর্তি, তারপরে মূসার বিরুদ্ধে ইসরাইলের বিরক্তি প্রকাশ, তারপরে সোনার বাছুরের ঘটনা আবার, তারপর মূসা এবং ঈসা, তারপর মূসা এবং সোনার বাছুর আবার, তারপর হযরত সোলায়মান এবং হযরত ইবরাহিম।